বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৩ অপরাহ্ন
এম.জাফরান হারুন, নিজস্ব প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করায় তিনটি বসত ঘর পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় পুলিশ ঘটনারস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের কারখানা গ্রামে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মোঃ নজরুল ইসলামের সাথে তার আপন বড় ভাই হুসাইন মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামের পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। নজরুল ইসলামের স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তার ঘরে কাজকর্ম করে দিতেন একই বাড়ির আবুল হোসেন চৌকিদারের স্ত্রী মোর্শেদা বেগম। এ বিষয়টি ভালো চোখে দেখতোনা হুসাইন মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন। এনিয়ে বেশ কয়েকবার সফিকুল ইসলাম তার স্ত্রী সুলতানা আক্তার ও ছেলে সরিফুল ইসলাম মোর্শেদা বেগমকে মারধর করেন।
ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার(২৯ এপ্রিল) সকাল ৮টার সময় তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে হুসাইন মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা মোর্শেদা বেগমকে লাঠিসোটা নিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারধর করে। চুল ধরে টানাহেচরা করে । তার ডাকচিৎকার শুনে মেয়ে সাবিনা তাকে রক্ষা করতে এলে তাকেও মারধর করে এবং প্রাননাশসহ বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার হুমকি দেয়।
এই ঘটনার পর ওইদিন (বৃহস্পতিবার) দুপুরে মোর্শেদা বেগম বাউফল থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যায়।
মোর্শেদা বেগম অভিযোগ করেন, তাকে মারধরের ঘটনা তদন্তের জন্য বাউফল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুনিয়া বেগমের ছেলে সুমন পুলিশকে প্রভাবিত করে। তদন্ত কাজে বাধার সৃষ্টি করে। সুমন হুসাইন মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ও মোঃ নজরুল ইসলামের ভাইর ছেলে। পুলিশ চলে আসার পর সুমন তাকে গালমন্দ করেন এবং থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করায় তাকে দেখিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এরপর ওই দিন (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার সময় তার টিনসেট দোতালা ঘরটি পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এসময় পাশের শাহজাহান প্যাদা ও তার ভাই ফারুক প্যাদার চৌচালা টিনের দুটি ঘরে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে তাদের নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকাসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালে সরকারী অর্থায়নে তাদের দুই ভাইকে আদাপাকা দুইটি ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়। ওই ঘরের চার পাশে তিনি টিনের বারান্দা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতেন। নতুন করে ঘর তোলার জন্য তিনি টাকা জমাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় তার ঘরতোলার জন্য রাখা দুই লাখ ও তার ভাই ফারুক প্যাদার ৪০ হাজার টাকা আগুনে পুড়ে যায়। এ ছাড়াও আগুনে মোর্শেদা বেগমের কিস্তির ৯০ হাজার টাকা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের পুত্র সুমন বলেন, দুই পক্ষই আমার চাচা। আমি কোন চাচার পক্ষে পুলিশকে প্ররোচিত করে তদন্ত কাজ প্রভাবিত করিনি। আমাকে সায়েস্তা করতে আগুনের ঘটনায় জড়িয়ে কথাবার্তা বলা হচ্ছে। আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নই।
এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আল মামুন বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছি। দুই ভাইয়ের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছে। আগুন লাগার ঘটনা পরিকল্পিত কিনা খতিয়ে দেখা হবে। বিদ্যুতের শর্টশার্কিট থেকেও আগুন লেগে ঘরগুলো ভস্মিভূত হতে পারে। তবে প্রকৃত তথ্য উদঘাটনের জন্য আমরা সব দিক মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছি।####